শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রফিকুল ইসলামের পরিবারের ৩৫ বিঘা জমি, চারটি ফ্ল্যাট ও চারটি ভবন বা বাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তিনটি জাহাজ অবরুদ্ধ করা হয়েছে। তিনি অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ দিয়ে এসব সম্পদ গড়েছেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে উঠে এসেছে। এতে রফিকুলের স্ত্রী, শ্বশুর ও তিন ভাইসহ পরিবারের ১২ জন সদস্য দুর্নীতির জালে ফেঁসে যাচ্ছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হুদা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। তাতে বলা হয়, অবৈধভাবে অর্জিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদসমূহ অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা হস্তান্তর বা বন্ধক বা বেহাত করার প্রচেষ্টা করছেন। অভিযোগ নিষ্পত্তির পূর্বে সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে কমিশনের কার্যক্রম ব্যাহত হবে। পরে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম এ বিষয়ে শুনানি করেন।
শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
জব্দ হওয়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে রফিকুলের স্ত্রী ফারহানা রহমানের নামে রাজধানীর নিকুঞ্জে প্লট ও গোপালগঞ্জে সাড়ে তিন বিঘা স্থাবর সম্পদ এবং শ্বশুর মজিবুর রহমানের নামে তেজগাঁওয়ে একটি ছয়তলা ও একটি পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে। ভাই কানাডাপ্রবাসী মাহফুজুর রহমানের নামে গোপালগঞ্জে ১১ বিঘা জমি ও একটি মার্কেট রয়েছে। বেকার ভাই এস আমিনুল ইসলামের নামে কাকরাইলে একটি, ভাই পুলিশের সাবেক কোর্ট ইন্সপেক্টর এস এম দিদারুল ইসলামের নামে মোহাম্মদপুরে একটি এবং ভাই মনিরুলের স্ত্রী পলি ইসলাম ও ভাগ্নি তানজিলা হক উর্মির নামে ধানমণ্ডিতে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
দলিল লেখক ভাগ্নে উজ্জ্বল মামুন চৌধুরীর নামে গোপালগঞ্জে তিনতলা একটি ভবন ও ২১ বিঘা জমি রয়েছে। বেকার ভাগ্নিজামাই সেলিম মীরের নামে দুই বিঘার বেশি জমি ও একতলা বাড়ি রয়েছে। বেকার ভগ্নিপতি শাফায়েত হোসেন মোল্লার নামে ৬ শতাংশ জমি রয়েছে। এ ছাড়া অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে রফিকুলের স্ত্রী ফারহানা রহমানের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি সী কোয়েস্ট-৩, শ্বশুর মজিবুর রহমানের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি সী কোয়েস্ট-২ এবং এমভি সী কোয়েস্ট-১ অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া বোন ফেরদৌস বেগমের অগ্রণী ব্যাংকের হিসাব এবং ভাই মনিরুল ইসলামের একটি জিপগাড়ি অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
দুদকের দাবি, রফিকুল ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে তাঁর স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালিকা, ভাই, বোনসহ নিকটাত্মীয়দের নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। অভিযোগটির অনুসন্ধান চলমান।
এ বিষয়ে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, অবৈধভাবে অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যাতে বেহাত হয়ে না যায় সে জন্য এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধের আবেদন করা হয়েছে।